বৃহস্পতিবার, ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ১০:০০

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ
ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে সারাদেশে ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ দুই হাজার ৫শ’ টাকার ফসলের ক্ষতি

ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে সারাদেশে ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ দুই হাজার ৫শ’ টাকার ফসলের ক্ষতি

dynamic-sidebar

কৃষিমন্ত্রী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীতে দেশে খুব একটা ক্ষতি হয়নি। যে ক্ষতি হয়েছে তাতে বাজার মূল্যে কোন প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ৩৫ জেলার প্রায় ৬৩ হাজার ৬৩ হেক্টর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ফসলের মধ্যে ধান, ভুট্টা, সবজি, পাট ও পান রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্য ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ দুই হাজার ৫০০ টাকা। মঙ্গলবার সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৩১ জন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সংগৃহীত প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এ ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে। ফসলের এই ক্ষতিতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আক্রান্ত ফসলি জমির মধ্যে বোরো ধান ৫৫ হাজার ৬০৯ হেক্টর, সবজি তিন হাজার ৬৬০ হেক্টর, ভুট্টা ৬৭৭ হেক্টর, পাট দুই হাজার ৩৮২ হেক্টর ও ৭৩৫ হেক্টর পান রয়েছে।

এই ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত ৩৫ জেলা হচ্ছে- নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরিয়তপুর, বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর।

ক্ষতির ধরন ও শতকরা হার তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, অধিকাংশ বোরো ধান পরিপক্ব অবস্থায় বাতাসে হেলে পড়েছে। যার দুই শতাংশ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সবজির ক্ষেত্রে মাচা ভেঙ্গে ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বাতাসের কারণে শাক-সবজি ক্ষতি হয়েছে যার ৯ শতাংশ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। অধিকাংশ ভুট্টা মোচা অবস্থায় বাতাসে হেলে পড়েছে, এর ১৫ শতাংশ ক্ষতি হতে পারে। দমকা বাতাসে পাট হেলে বা ভেঙ্গে পড়েছে। যা শতকরা হারে পাঁচ শতাংশ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দমকা বাতাসে পানের বরজ ভেঙ্গে পড়েছে। যার এক শতাংশ ক্ষতি হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ফণী আসার আগে ও চলাকালীন কৃষি মন্ত্রণালয় এবং অধীন সংস্থাগুলোর কার্যক্রম তুলে ধরেন আব্দুর রাজ্জাক। ফণী চলে যাওয়ার পর বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অঞ্চল, জেলা, উপজেলা ও ব্লক পর্যায় থেকে আক্রান্ত ফসলি জমির তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে অবহিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে যাতে আটকে যাওয়া পানি জমি থেকে দ্রুত নেমে যায় সে জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। শতকরা ৮০ ভাগ পরিপক্ব অবস্থায় আছে এমন ধান কেটে ফেলা ও হেলে পড়া ধান দ্রুত কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

জলাবদ্ধতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত আউস ক্ষেতে গ্যাপ পূরণের জন্য ঘনগোছা থেকে চারা উত্তোলন করে ফাঁকা জায়গায় রোপণ, পানের বরজের বেড়া নির্মাণ এবং লতা কাঠিতে তুলে দেয়া, সবজি ক্ষেতের জমে থাকা পানি দ্রুত নিষ্কাশনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

সবজি ক্ষেতের চালা বা মাচা মেরামতের পরামর্শ দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে সবজি বিষ কেনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নষ্ট হওয়া গাছের গোড়ায় নতুন চারা লাগিয়ে শূন্যস্থান পূরণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমে পরামর্শগুলো বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরি করে পুনর্বাসন কর্মসূচীর আওতায় বীজ, সার ও আর্থিক সহায়তা দেয়ার কর্মসূচী নেয়া হবে। পরবর্তী জরিপ ২০১৯-২০ মৌসুমে রোপা আমন ধানের বীজ বা চারা উৎপাদন ও বীজ বিতরণ কর্মসূচী গ্রহণ করার পরিকল্পনা আছে।

তিনি আরও বলেন, রবি ২০১৯-২০ মৌসুমে বিনামূল্যে বোরো ধান, গম, ভুট্টা, সরিষা, চীনা বাদাম, মুগ চাষের জন্য বীজ ও সার বিতরণের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচী নেয়া হবে। এছাড়া শীতকালীন সবজি চাষের জন্য পারিবারিক পুষ্টির অংশ হিসেবে বিনামূলে বিভিন্ন সবজি বীজ বিতরণ কর্মসূচী নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতের ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে গত ৪ মে সকালে অনেকটা দুর্বল অবস্থায় খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ঢাকা-ফরিদপুর অঞ্চল পেরিয়ে সন্ধ্যা নাগাদ এটি লঘুচাপে পরিণত হয়।

ফণী ধেয়ে আসার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ মে সকাল থেকে পায়রা ও মংলা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম বন্দরে ৬ নম্বর বিপদ সঙ্কেত ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত জারি করা হয়।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net